স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্রেতা সংকটে বিক্রি হচ্ছেনা ধানের জালা (ধানের চারা)। এতে করে লোকসানের মুখে পড়েছেন ধানের চারার চাষীরা। এদিকে গত তিনদিনের বৃষ্টিতে অধিকাংশ ধানের চারার জমি পানিতে তলিয়ে গেছে এনিয়ে দুঃচিন্তার শেষ নেই চাষীদের। বিপুল পরিমান ধানের চারা উৎপাদন হলেও তা এখন পানিতে তলিয়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম।
গতকাল বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব চেয়ে বড় ধানের চারার হাট সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নন্দনপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায় ধানের চারা নিয়ে বসে আসেন চাষীরা তবে বাজারে ক্রেতা নেই। প্রতি বছর এমন সময় জেলার নাসিরনগর, কসবা ও সরাইল, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব, সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কৃষকরা এখানে আসেন ধানের চারা কিনতে। কিন্তু এবছর বাজারে ক্রেতা সংকট।
ধানের চারা ব্যবসায়ী ৭০ বছর বয়সী মনজু মিয়া বলেন, তিনি গত ১০ বছর ধরে নন্দনপুর বাজারে ধানের চারা বিক্রি করে আসছেন। তিনি তার নিজের ১০ শতক জমিতে ধানের চারা রোপন করেন। ধানের চারা বিক্রি করেই চলে তার সংসার। তিনি বলেন, প্রতি বছর জালা বিক্রি করে লাভবান হলেও এবছর বাজারে ক্রেতা সংকট। এ বছর তিনি লোকসানের মুখে পড়বেন।
তিনি বলেন, গত তিনদিনের বৃষ্টিতে তার বীজতলাটি তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ধানের জালা বিক্রি না হওয়ায় সংসারের ভরণ-পোষন করতে বাধ্য হয়ে তার ছেলে রিকসা চালানোর পেশাকে বেচে নিয়েছে।
সুহিলপুর ইউনিয়নের হারিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও ধানের চারা ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি পেশায় ছিলেন অটোরিকসা চালক। কিন্তু অটোরিকসার লাইসেন্স করাতে না পেরে অটোরিক্সা চালানো বন্ধ করে দিয়ে ধানের চারা নিয়ে বসেছেন নন্দনপুর বাজারে। কিন্তু ক্রেতা না থাকায় তিনি দিশেহারা।
সিরাজ মিয়া নামে অপর ব্যবসায়ী জানান, তিনি ৭০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে ধানের চারার ব্যবসা শুরু করেছেন। কিন্তু ক্রেতা সংকট হওয়ায় তিনি পুজি নিয়ে চাপে আছেন। তিনি বলেন, বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৩শত টাকার জালা বিক্রি করেছেন।
বাজারে ধানের চারা কিনতে আসা ক্রেতা সুমন মিয়া জানান, তার ৪ কানি (৩০ শতাংশে ১ কানি) জমি আছে। পুরো জমিতেই ধানের চারা লাগানো হয়েছে। এখন জমির মাঝে মধ্যে কিছু চারা লাগাতে তাই তিনি চারা কিনতে এসেছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মুন্সি তোফায়েল হোসেন বলেন, সকল প্রান্তিক কৃষকদের জন্য আমরা কৃষি ব্যাংক থেকে একটি লোনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত ৭০/৮০ জনের একটি তালিকা কৃষি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, কোন কৃষক যদি বিপদে পড়ে আমাদের কাছে আসে তাহলে তাকে কৃষি ব্যাংক থেকে লোনের ব্যবস্থা করে দিব।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply